ধীরে ধীরে চোখ খুলল কস্তুরী। মনে হল কোট মাথায় বিলি কাটছে। কী আরাম! কস্তুরী চোখ মেলতেই থেমে গেল। চারপাশে কোমল আলো। মাথার ওপর ছাদজুড়ে ছড়িয়ে আছে আলোকবৃত্ত, কিন্তু চোখে লাগছে না। মৃদু শীতল বাতাস গায়ে লাগলেও শীত করছে না। ভারী মায়াবী আলো। দিন না রাত বুঝতে পারছে না। এক অনাবিল ভালোলাগা ও প্রশান্তির স্বর্গীয় অনুভূতি। একটা শব্দও হচ্ছে একটানা।
ডান পাশে চোখে পড়ল অসমতল দেওয়াল বেয়ে জলস্রোত নেমেছে। বুঝতে পারল তারই শব্দ। কিন্তু একটা যান্ত্রিক আওয়াজও যেন মিশে রয়েছে। পাশের একটা দেওয়াল জুড়ে মেঝে থেকে সিলিং পর্যন্ত নানা যন্ত্রপাতি। জলের তোড়ে একটা চাকাও ঘুরছে। পায়ের দিকে তাকাতে চোষে পড়ল বেশকিছু ছোট বড়ো মাঝারি ঘড়িযুক্ত ও ছোটছোট লাল সবুজ আলো জ্বলা ছাইরঙা মস্ত ধাতব বাক্স, আর তার পাশে অজস্র তার ও দুটো মনিটর। এই প্রকাণ্ড যান্ত্রিক ব্যবস্থা মেঝে থেকে উঠে যেন সিলিং ফুঁড়ে বেরিয়ে গেছে। ওটা যে একটা বৈদ্যুতিক ইউনিট তা স্পষ্ট। বাঁদিকে দেওয়ালের শেষে চোখে পড়ল একটা ঈষদালোকিত পথ বেরিয়ে গেছে। পাল্লাহীন দরজার আভাস পথের শুরুতে। আরও বাঁয়ে তাকাতে কিছু জামাকাপড় টাঙানো দড়ি, রড, আলমারি, তাক ও টেবিলে রাখা বাসনপত্র চোখে পড়ল। এদেইকের দেওয়ালটাও বাঁকানো অবতল, তাই এতকিছু কুলিয়ে গেছে। এগুলোর ওপর অসমান দেওয়ালটা ওপরে উঠে সিলিং-এর মস্ত বৃত্তাকার আলো পরিধি বরাবর স্পর্শ করেছে।